1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

স্কুলের নতুন পাঠ্যবই : ভুতলেখকের রাজ্যপাঠ

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ২০৭ বার পঠিত

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান : নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যসূচি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক থাকলেও এখন অভিভাবকদের মধ্যেও প্রতিবাদ উঠেছে। স্কুল ও মাদরাসার নতুন পাঠ্যবই নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিশেষ করে নি¤œ মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সমাজ বই নিয়ে তুমুল বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে, মাদরাসার বইয়ে নাস্তিকতা ও পৌত্তলিকতা, বিবর্তনবাদ পর্দাবিদ্বেষ ঢুকিয়ে দেয়া এবং ইসলামের ইতিহাস বিকৃতি করে শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে দেশের মানুষ। এ ছাড়া পরিচিত লেখকের লেখা-সম্পাদনায় সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ে হুবহু চুরি আর গুগলের অনুবাদ নিয়েও সমালোচনার ঝড় বইছে। ষষ্ঠ শ্রেণীর সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে স্থান পেয়েছে ডারউইনের তত্ত¡। বলা হয়েছে, পূর্বজন্মে আমরা সবাই বানর ছিলাম। সেখান থেকেই কালের বিবর্তনে আমরা মানুষে রূপান্তরিত হয়েছি। এ ছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসেও ভুল তথ্য উপাত্ত দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভুল শেখানো হচ্ছে।
দেশের বিশিষ্টজন থেকে শুরু করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ ভুল, বিকৃত ইতিহাস, যৌনতা, সা¤প্রদায়িক বিদ্বেষ দিয়ে ভরা এবারের নতুন বই দ্রæত সংশোধনের জোর দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে অনেক বিজ্ঞজনের মতো আমাদের অভিমত, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, বই রচনা ও স¤পাদনাসহ অন্যান্য দায়িত্ব যেন কিছু চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে। এসব কাজে যাতে দেশের যোগ্য ইসলামী পÐিত, বিষয় বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানী নিয়োগ করা হয় সে জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচেতনভাবে কাজ করবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডারউইনিজম সম্পর্কে আলোচনা করা প্রয়োজন মনে করি। বিবর্তনবাদ বলতে কি বোঝায় সে বিষয়ে সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করা হবে।
ডারউইনের বিবর্তন তত্ত¡ অনুসারে, পৃথিবীতে সমস্ত জীবজগতের আবির্ভাব হয়েছে একটি সরল এককোষী জীব থেকে- যা ‘সাধারণ পূর্বপুরুষ’ নামে পরিচিত। আর এই এককোষী ব্যাক্টেরিয়ার মতো জীবের আবির্ভাব হয় কেমিক্যাল বিবর্তন প্রক্রিয়ায়। প্রাকৃতিক নির্বাচনের (যারা যোগ্য তারা পরিবেশে উদ্দেশ্যহীনভাবে টিকে থাকে; দুর্বলরা বিলুপ্ত হয়) মাধ্যমে কালের প্রক্রিয়ায় (মিলিয়ন বছর টাইম স্কেলে) উদ্দেশ্যহীন ও দৈবক্রমে অজৈব পদার্থ থেকে জীবের মৌলিক উপাদান ডিএনএ ও প্রোটিন তৈরি হয়। তারপর এগুলো মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে ট্রায়াল-অ্যান্ড-এ্যারর প্রক্রিয়ায় কোনোক্রমে হঠাৎ করে হয়ে যায় এককোষী ব্যাক্টেরিয়ার মতো জীব বা আমাদের আদি পিতা। সেই এককোষী জীব থেকে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে উদ্দেশ্যহীনভাবে ও দৈবক্রমে অপরিকল্পিত মিউটেশনের (জিনগত পরিবর্তন) মাধ্যমে ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে পৃথিবীর সমস্ত প্রজাতি। ডারউইনের সময়ে বিজ্ঞানের অগ্রগতি আজকের মতো ছিল না। সে সময় জীবকোষকে অত্যন্ত সরল মনে করা হতো- ডিএনএ আবিষ্কার তো দূরের কথা। ডারউইন বলে গেছেন, তার তত্ত¡ প্রমাণের জন্য জীব সৃষ্টির পর্যায়ক্রমিক ধাপ বা ট্রানজিশনাল স্পিসিস দেখাতে হবে। প্রায় ১৬০ বছর ধরে এই স্পিসিস ফসিল সন্ধানে পৃথিবীর যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কল্পিত ‘ট্রানজিশনাল স্পিসিস’ বা ‘মিসিং লিঙ্ক’-এর সন্ধান পাওয়া যায়নি। আর তাই বর্তমানে বিবর্তনবাদীরা ফসিল আলোচনা থেকে বিরত থাকতে আপ্রাণ চেষ্টা করে। আর ব্যাখ্যা হিসেবে দেখায় নিও-ডারউইনিজমকে- বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে জেনেটিক সিকোয়েন্সের মিলের সামঞ্জস্যতাকে।
‘ওফধ’ নামক ফসিল আবিষ্কারের (২০০৯) পর সমস্ত পৃথিবীর মিডিয়াজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিবর্তনবাদ মিডিয়াতে জনপ্রিয় করতে ঝরৎ উধারফ অঃঃবহনড়ৎড়ঁময-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। ইডা (ওফধ) আবিষ্কারের পর তিনি অত্যন্ত আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, এখন থেকে আর কেউ বলতে পারবে না, মিসিং লিঙ্ক নেই। সাথে সাথে মিডিয়াতে বলা হলো ‘ইডা’ ফসিল সব ধর্মকে মিথ্যা প্রমাণিত করল। পরে দেখা গেল ওটি কোনো মিসিং লিঙ্ক নয়; বরং লেমুর নামক জন্তু (ওফধ রং হড়ঃ ৎবষধঃবফ ঃড় যঁসধহং, পষধরস ংপরবহঃরংঃং)।
বর্তমান সময়ের বিবর্তিত-বিবর্তনবাদ তত্তে¡র (নিও-ডারউইনিজম) ভিত্তি দাঁড়িয়ে আছে ১৮ শতকের বিখ্যাত সুইডিশ উদ্ভিদবিজ্ঞানী এবং প্রকৃতিবিদ ক্যারোলাস লিনিয়াসের জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাসের ওপর। এই শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে জীবের বাহ্যিক মিলের ভিত্তিতে। আর তিনি এই যথেষ্ট শ্রমসাধ্য কাজ করেছিলেন গডের মহিমা তুলে ধরার জন্য (সড়ঃঃড় ‘উবঁং পৎবধারঃ, খরহহধবঁং ফরংঢ়ড়ংঁরঃ’ অর্থাৎ-এড়ফ পৎবধঃবফ, খরহহধবঁং ড়ৎমধহরুবফ)। লিনিয়াস বিশ্বাস করতেন ‘শংকরকরণ’ এর মতো পদ্ধতির মাধ্যমে উদ্ভিদের নতুন প্রজাতি তৈরি করা যেতে পারে। বিবর্তনবাদীরা প্রায়ই এটিকে প্রমাণ হিসেবে নির্দেশ করে, তিনি নিজেই একজন বিবর্তনবাদী ছিলেন। কিন্তু এর জবাবে বলা দরকার, লিনিয়াস বিশ্বাস করতেন, নতুন প্রজাতি তৈরির প্রক্রিয়াটি উন্মুক্ত ((ড়ঢ়বহ-বহফবফ)) ও সীমাহীন নয়, তবে ইডেন উদ্যানের মূল উদ্ভিদগুলো নতুন প্রজাতির বিকাশের জন্য যা প্রয়োজন তা প্রদান করে এবং এ ধরনের বিকাশ গডের পরিকল্পনার অংশ ছিল। এমন কোনো প্রমাণ নেই, লিনিয়াস কখনো উন্মুক্ত বিবর্তনকে বিবেচনা করতেন।
বিবর্তনের বিপক্ষে বিজ্ঞানী : বিবর্তনবাদের ধারণা উনিশ শতকে দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিজ্ঞানী, ধর্মতত্ত¡¡বিদ ও সাধারণ মানুষ নিজ নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে এ তত্তে¡র বিরোধিতা শুরু করে। এক হাজার বিজ্ঞানী প্রকাশ্যে ‘ডারউইনবাদ থেকে ভিন্নমত’ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে বলেছেন (২ ডিসেম্বর-২০১৯), ‘আমরা জীবনের জটিলতা ব্যাখ্যার ব্যাপার ৎধহফড়স মিউটেশন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের সক্ষমতার-ক্ষমতার দাবির বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করছি। ডারউইনিয়ান তত্তে¡র সাক্ষ্য-প্রমাণের সতর্কতার সাথে পরীক্ষা করা উচিত।’
‘ডারউইনিজম থেকে বৈজ্ঞানিক ভিন্নমত’ তালিকায় এক হাজার ৪৩ জন বিজ্ঞানী রয়েছেন। এটি ডিসেম্বর ২০১৯ এ হাজার অতিক্রম করেছে, ডিসকভারি ইনস্টিটিউটের প্রোগ্রাম অফিসার সারাহ চাফি বলেন। (সূত্র : ঞযব ঈড়ষষবমব ঋরী)
ডারউইনের তত্ত¡টি কোনো বাস্তব বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, এটি একটি ‘ধারণা’ মাত্র। অধিকন্তু ডারউইন তার এই বইয়ের ‘তত্ত¡টির কিছু সমস্যা’ শীর্ষক দীর্ঘ একটি অধ্যায়ে স্বীকার করেছেন, বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব দিতে তত্ত¡টি অপারগ। বিষয়টি তিনটি মূল প্রসঙ্গের ভিত্তিতে পর্যালোচনা করা যেতে পারে- ১. পৃথিবীতে প্রাণের অভ্যুদয় কিভাবে হলো তা এই তত্ত¡ কোনোভাবেই ব্যাখ্যা করতে পারে না; ২. এই তত্তে¡ প্রস্তাবিত ‘বিবর্তন প্রক্রিয়া’গুলোর বিবর্তন করার কোনো ক্ষমতা আদৌ আছে কি না তা প্রতিপাদন করার যোগ্য কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত নেই, ৩. জীবাশ্মের ইতিহাস বিবর্তন তত্তে¡র সম্পূর্ণ বিপরীত ধারণা প্রমাণ করে।
প্রথম অনতিক্রম্য বাধা : বিবর্তনবাদী তত্ত¡ দাবি করে, আদিম পৃথিবীর বুকে ৩৮০ কোটি বছর আগে একটিমাত্র জীবিত কোষের উদ্ভব হয় আর সেটি থেকেই সব প্রাণধারী প্রজাতির অভ্যুদয় ঘটে। একটিমাত্র কোষ কি করে লাখ লাখ জটিল জীবন্ত প্রজাতির জন্ম দিতে পারে এবং যদি এরকম ঘটেই থাকে তাহলে জীবাশ্মের ইতিহাসে এর কোনো চিহ্ন কেন পাওয়া যাচ্ছে না? এ রকম বহু প্রশ্নের জবাব দিতে অপারগ এ তত্ত¡। তবে, অনুমিত বিবর্তনশীল প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ স¤পর্কে, প্রথম ও প্রধান প্রশ্ন হচ্ছে- এই ‘প্রথম কোষ’-এর উৎপত্তি কিভাবে হলো? বিবর্তনতত্ত¡, সৃষ্টিতত্ত¡ কোনো প্রকার আধিভৌতিক শক্তি অস্বীকার করে বিধায় দাবি করে, ‘প্রথম কোষ’টি প্রকৃতির নিয়মাবলির মধ্যেই যোগাযোগের কারণে উদ্ভূত হয়, এর পেছনে কোনো নকশা, বিন্যাস বা পরিকল্পনা ছিল না। প্রকৃতির বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মিশ্রণের কারণে জড় বা অজৈব বস্তু থেকে জৈব কোষের উদ্ভব ঘটে। জীববিদ্যার অলঙ্ঘনীয় নিয়মাবলির সাথে এ দাবি অসঙ্গতিপূর্ণ।
প্রাণের উৎস প্রাণ : ডারউইন তার বইয়ের কোথাও প্রাণের উৎপত্তির বিষয়ে কিছু বলেননি। তার সমকালে বিজ্ঞানের আদিম ব্যুৎপত্তি এ ধারণার বশবর্তী ছিল যে, সব প্রাণীই সরল শরীর সংস্থানবিশিষ্ট। বিভিন্ন জড়বস্তুর সংশ্লেষণে প্রাণের উৎপত্তি হয়। জড়বস্তু থেকে জীবন্ত বস্তুর জন্মের এ ‘অজীবজনি তত্ত¡টি মধ্যযুগ থেকেই ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ছিল। সাধারণ বিশ্বাস ছিল, পোকা-মাকড়ের জন্ম হয় খাদ্যের উচ্ছিষ্ট থেকে এবং ইঁদুরের জন্ম হয় গম থেকে।
২০ শতকের নিষ্ফল প্রয়াস : প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কে বিংশ শতাব্দীতে প্রথম যে বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানী গবেষণায় প্রবৃত্ত হন তিনি হচ্ছেন প্রখ্যাত রুশ প্রাণিবিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ওপারিন। ১৯৩০-এর দশকে প্রণীত বিভিন্ন তাত্তি¡ক অভিসন্দর্ভে তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন, জড়জগতের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার আকস্মিক যোগাযোগ থেকে জীবকোষের উৎপত্তি হতে পারে। কিন্তু তার সব গবেষণার ব্যর্থ হয়।
ওপারিনের বিবর্তনবাদী অনুসারীরা প্রাণের উৎপত্তি সংক্রান্ত সমস্যাটি সমাধানের জন্য অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। সর্বাপেক্ষা সুবিদিত পরীক্ষাটি চালিয়েছিলেন ১৯৫৩ সালে মার্কিন রসায়নবিদ স্ট্যানলি মিলার। আদিম পৃথিবীর আবহাওয়ামÐলে যেসব গ্যাস বিরাজমান ছিল বলে তিনি দাবি করেন, একটি পরীক্ষায় সেসব গ্যাস সম্মিলিত করে তিনি সেই মিশ্রণের সাথে শক্তি (এ্যানার্জি) যুক্ত করেন, তারপর তার সাথে সংশ্লেষিত করেন বিভিন্ন প্রোটিনের সংযুক্তিতে বিদ্যমান কিছু জৈব অণু (অ্যামাইনো এসিড)।
মাত্র কয়েক বছর পার হতে না হতেই স্পষ্ট বোঝা যায়, বিবর্তনবাদ প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উপস্থাপিত এই পরীক্ষা অসিদ্ধ। কারণ এতে ব্যবহৃত আবহাওয়ামÐল ছিল পৃথিবীর বাস্তব পার্থিব পরিপার্শ্ব থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের।
বিংশ শতাব্দীতে প্রাণের উৎপত্তি ব্যাখ্যার জন্যে সব বিবর্তনবাদী প্রয়াস ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। স্যান ডিয়েগোর স্ক্রিপ্স ইনস্টিটিউটের ভ‚-রসায়নবিদ জেফ্রি বাডা ১৯৯৮ সালে ‘আর্থ’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে স্বীকার করেছেন : আজ এই বিংশ শতাব্দীর বিদায় লগ্নে আমরা এখনো সেই বৃহত্তম অমীমাংসিত সমস্যাটির সম্মুখীন হয়ে আছি যে- পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল?
১৮৫৯ সালে ডারউইন ‘অন দ্য অরিজিন অব স্পিসিস’ প্রকাশ করার কিছু পরেই, পাস্তুর জীবনের উৎস হিসেবে বিবর্তনীয় দৃষ্টিভঙ্গি স্বতঃস্ফ‚র্ত প্রজন্মের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেন। পাস্তুরের সরল কিন্তু ংধিহ-হবপশবফ ভষধংশ পরীক্ষাগুলো জৈব জীবন থেকে অজীবন ধারণাকে নস্যাৎ করে এবং বায়োজেনেসিসের নিয়মের ভিত্তিও স্থাপন করে : জীবন শুধু জীবন থেকে আসে। ১৮৬৪ সালে সরবোনে তার বিজয়োল্লসিত ভাষণে পাস্তুর বলেন, ‘এ সরল গবেষণা যে মরণাঘাত হেনেছে তা সয়ে আর কোনোদিন উঠে দাঁড়াতে পারবে না অজীবজনি তত্ত¡।’
ফসিল সংক্রান্ত আরো তথ্য ডা. আব্দুল্লাহ সাঈদ খানের আলোচনায় পাওয়া যায়। তিনি কিছু তথ্যসূত্র উল্লেখসহ বলেন, গত দেড় শ’ বছরে ১০ কোটির উপর ফসিল আবিষ্কৃত হয়েছে, যাতে একটিও মধ্যবর্তী প্রজাতি নেই। ব্রিটিশ বিবর্তনবাদী ও জীবাশ্মবিদ কলিন প্যাটারসন এ বিষয়ে বলেছেন- ঘড় ড়হব যধং বাবৎ ঢ়ৎড়ফঁপবফ ধ ংঢ়বপরবং নু সবপযধহরংসং ড়ভ হধঃঁৎধষ ংবষবপঃরড়হ. ঘড় ড়হব যধং বাবৎ মড়ঃ হবধৎ রঃ ধহফ সড়ংঃ ড়ভ ঃযব পঁৎৎবহঃ ধৎমঁসবহঃ রহ হবড়-উধৎরিহরংস রং ধনড়ঁঃ ঃযরং য়ঁবংঃরড়হ. (ঈড়ষরহ চধঃঃবৎংড়হ ইইঈ (১৯৮২) ্ খ গ ঝঢ়বঃহবৎ-রহ-অঃষধং ড়ভ ঈৎবধঃরড়হ)
কেন ফসিল রেকর্ডে বিবর্তনের প্রমাণ নেই তা বিখ্যাত নিও-ডারউইনবাদী জীবাশ্মবিদ স্টিভেন জে. গোল্ড এভাবে ব্যাখ্যা করেন ঞযব যরংঃড়ৎু ড়ভ সড়ংঃ ভড়ংংরষ ংঢ়বপরবং রহপষঁফবং ঃড়ি ভবধঃঁৎবং ঢ়ধৎঃরপঁষধৎষু রহপড়হংরংঃবহঃ রিঃয মৎধফঁধষরংস: ১. ঝঃধংরং. গড়ংঃ ংঢ়বপরবং বীযরনরঃ হড় ফরৎবপঃরড়হধষ পযধহমব ফঁৎরহম ঃযবরৎ ঃবহঁৎব ড়হ বধৎঃয. ঞযবু ধঢ়ঢ়বধৎ রহ ঃযব ভড়ংংরষ ৎবপড়ৎফ ষড়ড়শরহম সঁপয ঃযব ংধসব ধং যিবহ ঃযবু ফরংধঢ়ঢ়বধৎ; সড়ৎঢ়যড়ষড়মরপধষ পযধহমব রং ঁংঁধষষু ষরসরঃবফ ধহফ ফরৎবপঃরড়হষবংং. ২. ঝঁফফবহ ধঢ়ঢ়বধৎধহপব. ওহ ধহু ষড়পধষ ধৎবধ, ধ ংঢ়বপরবং ফড়বং হড়ঃ ধৎরংব মৎধফঁধষষু নু ঃযব ংঃবধফু ঃৎধহংভড়ৎসধঃরড়হ ড়ভ রঃং ধহপবংঃড়ৎং; রঃ ধঢ়ঢ়বধৎং ধষষ ধঃ ড়হপব ধহফ ‘ভঁষষু ভড়ৎসবফ. (ঝঃবঢ়যবহ ঔ. এড়ঁষফ, “ঊাড়ষঁঃরড়হ’ং ঊৎৎধঃরপ চধপব,” ঘধঃঁৎধষ ঐরংঃড়ৎু, ঠড়ষ. ৮৬, ঘড়. ৫, গধু ১৯৭৭, ঢ়. ১৪)
অন্য দিকে, জীবাশ্মবিদ নাইলস এলড্রেজ জীবাশ্ম রেকর্ড দেখে বিবর্তনবাদীদের হতাশা ব্যক্ত করেন এভাবে : ঘড় ড়িহফবৎ ঢ়ধষবড়হঃড়ষড়মরংঃং ংযরবফ ধধিু ভৎড়স বাড়ষঁঃরড়হ ভড়ৎ ংড় ষড়হম. ওঃ ংববসং হবাবৎ ঃড় যধঢ়ঢ়বহ. (ঘরষবং ঊষফৎবফমব, জবরহাবহঃরহম উধৎরিহ)
মিউটেশনের মধ্য দিয়ে বিবর্তন হচ্ছে- এমন দাবিও করা হয়েছে। অসংখ্য পরীক্ষাগারে কোটি কোটি মিউটেশনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত একটি উদাহরণও নেই- মিউটেশনের মাধ্যমে একটি ব্যাক্টেরিয়া প্রজাতি আরেকটি ব্যাক্টেরিয়া প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে। অপেক্ষাকৃত বড় প্রাণীদের ব্যাপারে তারা বলবে যেহেতু বিবর্তন হতে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পার হতে হয়, ফলে আমাদের পক্ষে এই বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। ব্যাক্টেরিয়ার ‘জেনারেশন টাইম’ তো খুব দ্রæত। (ব্যাক্টেরিয়ার একটি নির্দিষ্ট কলোনি যে সময়ে সংখ্যায় ঠিক দ্বিগুণ হয়ে যায় তাকে বলে জেনারেশন টাইম) পরীক্ষাগারে বিজ্ঞান জগতে খুব পরিচিত ব্যাক্টেরিয়া ঊ. পড়ষর-এর জেনারেশন টাইম মাত্র ২০ মিনিট। অর্থাৎ যদি ঊ. পড়ষর-এর একটি ১০০ ব্যাকটেরিয়ার কলোনি নেয়া হয় তবে ২০ মিনিটের মধ্যে সেটি ২০০ ব্যাক্টেরিয়ার কলোনিতে পরিণত হবে। এখন পর্যন্ত ব্যাক্টেরিয়া নিয়ে ডারউইনবাদী বিবর্তনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাটি করেছেন বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানী রিচার্ড লেনস্কি। সেই ১৯৮৮ সাল থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে, এখনো চলছে।
২০১২ সাল নাগাদ ঊ. পড়ষর-র ৫০ হাজার জেনারেশন পার হয়েছে। এগুলো নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে, প্রতি ৫০০ জেনারেশন পর ঊ. পড়ষর, ঊ. পড়ষর-র স্ট্রেইনগুলো নিয়ে সেগুলোর জেনেটিক স্টাডি করা হয়েছে। অথচ, এখনো পর্যন্ত ঊ. পড়ষর, ঊ. পড়ষর-ই রয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে, বেশির ভাগ জিনের মিউটেশনের হার হলো প্রতি এক লাখে একটি এবং যে মিউটেশনগুলো হয় তার বেশির ভাগই ক্ষতিকারক। (ডরষষরধস অ. উবসনংশর, ঔড়হধঃযধহ ডবষষং, ঞযব উবংরমহ রহ খরভব, চধমব: ৪৪)
এরপরও যদি ধরে নেয়া হয়, মিউটেশন উপকারী হতে পারে, তারপরও মিউটেশনের মাধ্যমে জিন পরিবর্তন হয়ে একটি নতুন বৈশিষ্ট্য অভিযোজন হতে যে পরিমাণ সময় দরকার তা বিবর্তনবাদীদের কল্পনার জন্যও বেশি। অন্তত গওঞ-র প্রফেসর মারে ইডেন এবং বিবর্তনবাদী জর্জ জি সিম্পসনের হিসাব থেকে সেটিই বোঝা যায় : রভ রঃ ৎবয়ঁরৎবফ ধ সবৎব ংরী সঁঃধঃরড়হং ঃড় নৎরহম ধনড়ঁঃ ধহ ধফধঢ়ঃরাব পযধহমব, ঃযরং ড়িঁষফ ড়পপঁৎ নু পযধহপব ড়হষু ড়হপব রহ ধ নরষষরড়হ ুবধৎং – যিরষব, রভ ঃড়ি ফড়ুবহ মবহবং বিৎব চধমব ৫ ড়ভ ৫ রহাড়ষাবফ, রঃ ড়িঁষফ ৎবয়ঁরৎব ১০,০০০,০০০,০০০ ুবধৎং, যিরপয রং সঁপয ষড়হমবৎ ঃযধহ ঃযব ধমব ড়ভ ঃযব ঊধৎঃয. (ঝযড়হি রহ ধ ঢ়ধঢ়বৎ ঃরঃষবফ দঞযব ওহধফবয়ঁধপু ড়ভ ঘবড়-উধৎরিহরধহ ঊাড়ষঁঃরড়হ অং ধ ঝপরবহঃরভরপ ঞযবড়ৎু)
বিবর্তনবাদী জর্জ জি সিম্পসন : … ঢ়বৎভড়ৎসবফ ধ পধষপঁষধঃরড়হ ৎবমধৎফরহম ঃযব সঁঃধঃরড়হ পষধরস রহ য়ঁবংঃরড়হ. ঐব ধফসরঃঃবফ ঃযধঃ রহ ধ পড়সসঁহরঃু ড়ভ ১০০ সরষষরড়হ রহফরারফঁধষং, যিরপয পড়ঁষফ যুঢ়ড়ঃযবঃরপধষষু ঢ়ৎড়ফঁপব ধ হবি মবহবৎধঃরড়হ বাবৎু ফধু, ধ ঢ়ড়ংরঃরাব ড়ঁঃপড়সব ভৎড়স সঁঃধঃরড়হং ড়িঁষফ ড়হষু ঃধশব ঢ়ষধপব ড়হপব বাবৎু ২৭৪ নরষষরড়হ ুবধৎং. ঞযধঃ হঁসনবৎ রং সধহু ঃরসবং মৎবধঃবৎ ঃযধহ ঃযব ধমব ড়ভ ঃযব ঊধৎঃয, বংঃরসধঃবফ ঃড় নব ধঃ ৪.৫ নরষষরড়হ ুবধৎং ড়ষফ.” তথাপি নাস্তিকরা কেন মিউটেশনকে বিবর্তন সংঘটনের ‘প্রভু’ মনে করে? ‘হে নবী; এ লোকদের জিজ্ঞেস কর) কোনো সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এরা কি নিজেরাই সৃষ্টি হয়েছে? না কি এরা নিজেরাই নিজেদের সৃষ্টিকর্তা? না কি পৃথিবী ও আসমানকে এরাই সৃষ্টি করেছে? প্রকৃত ব্যাপার হলোÑ তারা বিশ্বাস করে না।’ (সূরা তুর, আয়াত : ৩৫-৩৬)
বিবর্তনবাদীদের তথাকথিত প্রথম কোষটি কিভাবে উদ্ভব হলো সে বিষয়ে তো এখনো প্রশ্ন করাই হয়নি। অথচ, ডগলাস এক্স যে বিষয়গুলো সম্ভাব্যতা কমাতে পারে সেগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে (অর্থাৎ বাদ দিয়ে) ১৫০টি অ্যামাইনো এসিডের একটি প্রোটিন তৈরি দুর্ঘটনাক্রমে হওয়ার সম্ভাব্যতা হিসাব করেছেন ১০-এর পরে ১৬৪টি শূন্য বসালে যে সংখ্যাটি হয় (তথা ১০+১৬৪টি শূন্য) এর মধ্যে এক বার। বিল ডেম্বসকি হিসাব করে দেখিয়েছেন, আমাদের দর্শনযোগ্য মহাবিশ্বে এক হাজার ৮০টি এলিমেন্টারি পার্টিকল আছে, বিগব্যাং থেকে এখন পর্যন্ত ১০১৬ সেকেন্ড পার হয়েছে এবং দুটো বস্তুর মধ্যে যেকোনো বিক্রিয়া প্ল্যাঙ্কটাইম ১০-৪৩ সেকেন্ডের চেয়ে কম সময়ে হতে পারে না।
লেখক- গবেষক, কলামিস্ট, মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান, পাঠান পাড়া, (খান বাড়ী) কদমতলী, সদর, সিলেট-৩১১১, মোবাঃ ০১৯৬৩৬৭১৯১৭

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..